আইসিটি অধ্যায়-৬.৪ : ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম

ওয়েব স্কুল বিডি : সুপ্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, শুভেচ্ছা নিয়ো। আজ তোমাদের এইচ.এস.সি বা উচ্চমাধ্যমিকের আইসিটি অধ্যায়-৬.৪: ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (DBMS) থেকে DBMS এর ধারণা এবং এর প্রকারভেদ, ডেটাবেজ ও টেবিল তৈরি এবং ফিল্ডের ডেটা টাইপ নিয়ে আলোচনা করা হলো।


একাদশ ও দ্বাদশ শ্রেণী : তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি 
অধ্যায়-৬.৪: ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (DBMS)


ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম (DBMS): ডেটাবেজ ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম বা DBMS হলো এমন একটি সফটওয়্যার যা ডেটাবেজ তৈরি, পরিবর্তন, সংরক্ষণ, নিয়ন্ত্রণ এবং পরিচালনার কাজে ব্যবহৃত হয়। উদাহরণঃ MySQL, SQL, MSAccess, Oracle ইত্যাদি।

ডেটাবেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর: যে ব্যক্তি বা ব্যাক্তিবর্গের উপর ডেটাবেজের কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা অর্পিত থাকে সেই ব্যাক্তি বা ব্যক্তি বর্গকে ডেটাবেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বলে। সংক্ষেপে বলা যায়, ডেটাবেজের সার্বিক দায়িত্বে নিয়োজিত ব্যাক্তিকে ডেটাবেজ অ্যাডমিনিস্ট্রেটর বলে। অ্যাডমিনিস্ট্রেটর ডেটাবেস তৈরি, পরিবর্তন, পরিবর্ধন এবং নিয়ন্ত্রণ করে থাকে।
http://www.webschoolbd.com/2018/11/hsc-ict-chapter6.4.html

ডেটাবেজের প্রকারভেদঃ ডেটাবেজের গঠনের উপর ভিত্তি করে ডেটাবেজকে তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যথা-
১। ক্লায়েন্ট-সার্ভার ডেটাবেজ
২। ডিস্ট্রিবিউটেড ডেটাবেজ
৩। ওয়েব এনাবল ডেটাবেজ

ক্লায়েন্ট সার্ভারঃ ক্লায়েন্ট সার্ভার ডেটাবেজ হলো কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণকারী সার্ভারের সাথে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সম্পর্কযুক্ত একটি ডেটাবেজ সিস্টেম।মূল ডেটাবেজটি স্থায়ীভাবে সার্ভারে সংরক্ষিত থাকে এবং দূর-দূরান্তে বসে বিভিন্ন ব্যবহারকারী কম্পিউটার নেটওয়ার্ক সিস্টেমের অর্ন্তভুক্ত হয়ে ডেটাবেজে একসেস করতে পারে। এক্ষেত্রে ডেটাবেজ ব্যবহারকারীদের বলা হয় ক্লায়েন্ট/টার্মিনাল। ক্লায়েন্ট সার্ভার পদ্ধতিতে শুধুমাত্র একটি ডেটাবেজ সার্ভারে সংরক্ষিত থাকে যাকে ব্যাক এন্ড বলে এবং ক্লায়েন্ট কম্পিউটারগুলোতে শুধু মাত্র ফর্মস এবং রিপোর্ট থাকে যাকে ফ্রন্ট এন্ড বলে।

ক্লায়েন্ট: ক্লায়েন্ট একটি মেশিন(পিসি) যা ফ্রন্ট-এন্ড এপ্লিকেশন রান করে। এটি কীবোর্ড, মনিটর এবং মাউসের মাধ্যমে ইউজারের সহিত সরাসরি কার্য সম্পাদনে সহায়ক ভূমিকা পালন করে।

সার্ভার: সার্ভার একটি মেশিন যা সার্ভার সফটওয়ার (যেমন ওরাকল, এসকিউএল সার্ভার) রান করে এবং শেয়ার ডেটা এক্সেসে প্রয়োজনীয় ফাংশন হ্যান্ডল করে। একটি সার্ভার ব্যাক-এন্ড হিসাবে ভূমিকা পালন করে।
http://www.webschoolbd.com/2018/11/hsc-ict-chapter6.4.html

ডিস্ট্রিবিউটেড ডেটাবেজ:  ডিস্ট্রিবিউটেড ডেটাবেজ হলো কেন্দ্রীয়ভাবে নিয়ন্ত্রণকারী সার্ভারের সাথে নেটওয়ার্কের মাধ্যমে সম্পর্কযুক্ত একাধিক ডেটাবেজ সিস্টেম। এই পদ্ধতিতে একটি সেন্ট্রাল সার্ভার (কেন্দ্রীয় সার্ভার) এবং এর অধীনে এক বা একাধিক সাব-সার্ভার (উপ-সার্ভার) বা ওয়ার্কস্টেশন থাকতে পারে। সেন্ট্রাল সার্ভারসহ প্রত্যেকটি সাব-সার্ভারে/ওয়ার্কস্টেশনে ডেটাবেজ থাকে। সাধারণত ডেটাবেজ ওয়ার্কস্টেশনগুলো ভিন্ন ভিন্ন দূরবর্তী স্থানে হয়ে থাকে। এই পদ্ধতিতে প্রত্যেকটি ওয়ার্কস্টেশনে স্বতন্ত্রভাবে ডেটাবেজ সংশোধন, সম্পাদন প্রভৃতি কাজ করা হয় এবং সেন্ট্রাল-সার্ভারে রক্ষিত কেন্দ্রীয় ডেটাবেজ ওয়ার্কস্টেশনগুলোর ডেটাবেজের সর্বশেষ অবস্থা অনুযায়ী পরিবর্তিত বা আপডেট হয়। সার্ভারের কেন্দ্রীয় ডেটাবেজ সাব-সার্ভারগুলোর ডেটাবেজের ডেটা পাঠ,পরিবর্তন বা পরিমার্জন করতে পারে। এভাবে ডিস্ট্রিবিউটেড ডেটাবেজ পদ্ধতিতে সার্ভারের কেন্দ্রীয় ডেটাবেজের মাধ্যমে ওয়ার্কস্টেশনগুলোর ডেটাবেজ থেকে সর্বশেষ তথ্য সংগ্রহ ও ওয়ার্কস্টেশনগুলোর ডেটাবেজ পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণের কাজ করে থাকে। ডিস্ট্রিবিউটেড ডেটাবেজ ব্যবস্থাপনার জন্য ক্লায়েন্ট সার্ভার পদ্ধতিকেই প্রাধান্য দেওয়া হয়ে থাকে। কারণ ওয়ার্কস্টেশনগুলোতে আবার এক বা একাধিক ক্লায়েন্ট থাকতে পারে।

ওয়েব এনাবল ডেটাবেজ: যে ডেটাবেজ ইন্টারনেটের সুবিধাযুক্ত যেকোনো স্থান থেকে সাধারণ ওয়েব ইন্টারফেসের মাধ্যমে যেকোনো প্লাটফরমে রিমোটলি একসেস করা যায় তাকে ওয়েব এনাবল ডেটাবেজ বলে। অন্যভাবে বলা যায়, যে ডেটাবেজে ইন্টারনেট এবং ওয়েব ব্রাউজারের মাধ্যমে ডেটাবেজের তথ্যগুলো ইন্টারঅ্যাকটিভ উপায়ে একসেস, কুয়েরি, অর্ডার প্রদান, রিপোর্ট ও ট্র্যাক করা যায় এবং রেকর্ডসমূহকে পরিবর্তন করা যায় তাকে ওয়েব এনাবল ডেটাবেজ বলে।


ডেটাবেজ তৈরি: Database তৈরি করার জন্য DBMS হিসেবে Microsoft Access 2010 এর ব্যবহার দেখানো হল। প্রথমেই Microsoft Access 2010 অ্যাপ্লিকেশনটি ইন্সটল দিতে হবে। তারপর প্রোগ্রামটি রান করলে নিচের মত করে চিত্র প্রদর্শিত হবে।

টেবিল তৈরি: ডেটাবেজ হলো পরস্পর সম্পর্কযুক্ত একাধিক টেবিলের সমন্বয়ে গঠিত। প্রত্যেকটি টেবিল আবার কতকগুলো রেকর্ড নিয়ে গঠিত। পরস্পর সম্পর্কযুক্ত কতকগুলো ফিল্ড মিলে গঠিত হয় রেকর্ড। সুতরাং ফিল্ড হচ্ছে ডেটাবেজের ভিত্তি।কোনো টেবিল তৈরি করার পূর্বে টেবিলের প্রত্যেকটি রেকর্ডে কি কি ফিল্ড থাকবে তা নির্দিষ্ট করতে হয়। কোনো ডেটাবেজে কি কি ফিল্ড থাকবে তা নির্ভর করবে ডেটাবেজের উদ্দেশ্য বা ডেটাবেজে কী ধরনের ডেটা থাকবে তার উপর। আবার প্রত্যেকটি ফিল্ডে কী ধরনের ডেটা থাকবে অর্থাৎ ডেটা টাইপ কি হবে তা নির্ধারণ করতে হয়।

ডেটাবেজ টেবিলের ফিল্ডের ডেটা টাইপ সমূহ:

টেক্সট/ক্যারেক্টার (Text/Character): বেশিরভাগ ডেটাবেজে ব্যবহৃত প্রধান Data type হলো Text। টেক্সট/ক্যারেক্টার ফিল্ডে অক্ষর, সংখ্যা, চিহ্ন ইত্যাদি ব্যবহার করা যায়। সাধারণত এ ফিল্ডে সর্বোচ্চ ২৫৫টি বর্ণ/ অঙ্ক/চিহ্ন এককভাবে বা সম্মিলিতভাবে ব্যবহার করা যায়। তবে, সংখ্যা ব্যবহার করলেও এ ডেটার উপর গাণিতিক কাজ করা যায় না।

নাম্বার/নিউমেরিক (Number/Numeric): যে ফিল্ডে গাণিতিক ডেটা ব্যবহার করা হয়, সেই ফিল্ডকে প্রকাশ করার জন্য নাম্বার ব্যবহৃত হয়। নাম্বার/ নিউমেরিক ফিল্ডে যোগ বা বিয়োগ চিহ্নসহ/ছাড়া পূর্ণসংখ্যা ও ভগ্নাংশ মিলিয়ে প্রয়োজনীয় সংখ্যা ব্যবহার করা যায়। এ ফিল্ডের ডেটার উপর গাণিতিক অপারেশন (যোগ, বিয়োগ, গুণ ও ভাগ) করা যায়। ডেটার মানের ব্যাপ্তির উপর ভিত্তি করে নাম্বার/ নিউমেরিক ফিল্ডকে সাধারণত বিভিন্নভাবে ভাগ করা যায়। যথা:
১। বাইট (Byte)
২। ইন্টিজার (Integer)
৩। লং ইন্টিজার (Long Integer)
৪। সিঙ্গেল (Single)
৫। ডাবল (Double)

অটো নাম্বার (Autonumber): এটি একটি নিউমেরিক / নাম্বার ডেটা টাইপ। এটি সিরিজ জাতীয় বা ধারাবাহিক ডেটার ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। এ ডেটা টাইপের সুবিধা হচ্ছে এতে ডেটা এন্ট্রি করতে হয় না। স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডেটা এন্ট্রি হয়।

লজিক্যাল ডেটা (Yes/No): যুক্তিনির্ভর ফিল্ডের ডেটা টাইপ প্রকাশ করার জন্য Yes/No ব্যবহৃত হয়। কোনো ফিল্ডের মান ‘হ্যাঁ’ অথবা ‘না’ এ দুটি তথ্য এ ফিল্ডে সংরক্ষণ করা যায়। এই ফিল্ডের জন্য মেমোরিতে ১ বাইট জায়গা প্রয়োজন।

তারিখ ও সময় (Date/ Time): এ ফিল্ডটি তারিখ বা সময়ের জন্য ব্যবহার করা হয়। ১০০ থেকে ৯৯৯৯ বছরের তারিখ ও সময়ের জন্য এ ফিল্ড ব্যবহৃত হয়। এ ফিল্ডের জন্য মেমরিতে ৮ বাইট জায়গা প্রয়োজন। তারিখ ও সময় বিভিন্ন ফরমেটে হতে পারে।

মেমো (Memo): Memo, Text এর পরিপূরক হিসেবে ব্যবহৃত হয়। সাধারণত বর্ণনামূলক লেখা বা বর্ণনার জন্য এ ফিল্ড ব্যবহার করা হয়। এ ফিল্ডের ধারণ ক্ষমতা কম্পিউটার ডিস্কের ধারণ ক্ষমতার উপর নির্ভর করে। সাধারণত এ ফিল্ডে ৬৫,৫৩৬টি ক্যারেক্টর লেখা যায়। সাধারণত Remark, Address ফিল্ডে এ ডেটা টাইপ ব্যবহার করা হয়।

কারেন্সি (Currency): মুদ্রা বা টাকার অঙ্ক ইনপুট করার জন্য $ ব্যবহার করা হয়। শুধুমাত্র মুদ্রা বা টাকা সংক্রান্ত ডেটা এন্ট্রি করার জন্য Currency টাইপ সিলেক্ট করতে হয়। এ ফিল্ডের ডেটার উপর গাণিতিক অপারেশন সম্পূর্ণ প্রযোজ্য। এ ফিল্ডের জন্য মেমোরিতে ৮ বাইট জায়গা প্রয়োজন।

OLE(Object Linking Embedding) Object: যেসব তথ্য ডেটাবেজ নয় এমন সফটওয়্যারে আছে এবং লিংক এর মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ডেটাবেজে নেয়ার ক্ষেত্রে এ ডেটা টাইপ ব্যবহার করা হয়। যেমন- মাইক্রোসফট এক্সেল, পাওয়ার পয়েন্ট ইত্যাদি প্রোগ্রাম হতে শব্দ, ছবি, টেক্সট, গ্রাফ ইত্যাদি ডেটাবেজের কোন ফিল্ডে নেয়ার জন্য এ ডেটা টাইপ ব্যবহার করা হয়।

Hyperlink: সাধারণত ডেটাবেজ প্রোগ্রামের সাথে ওয়েব পেজের কোনো ফাইল কিংবা অন্য কোনো ব্যবহারিক প্রোগ্রামের ফাইল লিংক করার জন্য এ ডেটা টাইপ ব্যবহার করা হয়।

Look up wizard: সরাসরি কোনো ডেটা এন্ট্রি না করে কোনো লিস্ট বা টেবিল থেকে ডেটা নির্বাচন করে ডেটা ইনপুট করার জন্য এ ডেটা টাইপ ব্যবহার করা হয়।




প্রতিটি বিষয়ের নোট ও সাজেশান্স ডাউনলোড করতে অসুবিধা হলে আমাদের ফেসবুক পেজে ইনবক্স করো। শিক্ষার্থীরা নোট ,সাজেশান্স ও নতুন নতুন ভিডিও সবার আগে পেতে আমাদের চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব SUBSCRIBE করতে পারো এই লিংক থেকে।
আজই জয়েন করুন বাংলাদেশের লার্নিং প্ল্যাটফর্মে ( ওয়েভ স্কুল বিডি )

শিক্ষক হিসেবে জয়েন করুন
রেকর্ডেড/লাইভ প্রোগ্রাম করতে পারো
অ্যাফিলিয়েট হতে চাইলে

Muhammad Abdullah Al Mamun

I am Abdullah Al Mamun. Lecturer of Tejgaon College dept. of Mathematics. Have completed M.S in Mathematics from Chittagong University.

Post a Comment

আপনার কোন কিছু জানার থাকলে কমেন্টস বক্স এ লিখতে পারেন। আমরা যথাযত চেস্টা করব আপনার সঠিক উত্তর দিতে। ভালো লাগলে ধন্যবাদ দিতে ভুলবেন না। শিক্ষার্থীরা নোট ,সাজেশান্স ও নতুন নতুন ভিডিও সবার আগে পেতে আমাদের Web School BD চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব SUBSCRIBE করতে পারো।
- শুভকামনায় ওয়েব স্কুল বিডি

Previous Post Next Post