এইচ এস সি বাংলা ব্যাকরণ – বাক্যের শ্রেণীবিভাগ

ওয়েব স্কুল বিডি : সুপ্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, শুভেচ্ছা নিয়ো। আজ তোমাদের এইচ এস সি বাংলা ব্যাকরণ – বাক্যের শ্রেণীবিভাগ ধারণা নিয়ে আলোচনা করা হলো

অনলাইন এক্সামের বিভাগসমূহ:
জে.এস.সি
এস.এস.সি
এইচ.এস.সি
সকল শ্রেণির সৃজনশীল প্রশ্ন (খুব শীঘ্রই আসছে)
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি (খুব শীঘ্রই আসছে)
বিসিএস প্রিলি টেষ্ট

এইচ এস সি বাংলা ব্যাকরণ – বাক্যের শ্রেণীবিভাগ


প্রকাশভঙ্গি অনুযায়ী বাক্যের শ্রেণীবিভাগ
বাক্যের প্রকাশভঙ্গির ভিত্তিতে বাক্যকে ৫ ভাগে ভাগ করা হয়েছে-

বিবৃতিমূলক বাক্য : কোন কিছু সাধারণভাবে বর্ণনা করা হয় যে বাক্যে, তাকে বিবৃতিমূলক বাক্য বলে। বিবৃতিমূলক বাক্য ২ প্রকার।

ক) অস্তিবাচক বাক্য/ হাঁ বাচক বাক্য : যে বাক্যে সমর্থনের মাধ্যমে কোন কিছু বর্ণনা করা হয়, তাকে অস্তিবাচক বাক্য বা হাঁ বাচক বলে।

যে বাক্যে হাঁ বাচক শব্দ থাকে, তাকে হাঁ বাচক বা অস্তিবাচক বাক্য বলে।

যেমন- তুমি কালকে আসবে।
আমি ঢাকা যাব।

[সদর্থক বা অস্তিবাচক বাক্য : এতে কোনো নির্দেশ, ঘটনার সংঘটন বা হওয়ার সংবাদ থাকে। যেমন :
বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কা জিতেছে।
আজ দোকানপাট বন্ধ থাকবে।
ভাষা অনুশীলন; হৈমন্তী]

খ) নেতিবাচক বাক্য/ না বাচক বাক্য : যে বাক্যে অসমর্থনের মাধ্যমে কোন কিছু বর্ণনা করা হয়, তাকে নেতিবাচক বাক্য বা না বাচক বলে।

যে বাক্যে না বাচক শব্দ থাকে, তাকে নেতিবাচক বাক্য বা না বাচক বাক্য বলে।

যেমন- তুমি কালকে আসবে না।
আমি ঢাকা যাব না।

[নেতিবাচক বা নঞর্থক বাক্য : এ ধরনের বাক্যে কোন কিছু হয় না বা ঘটছে না- নিষেধ, আকাঙ্ক্ষা, অস্বীকৃতি ইত্যাদি সংবাদ কিংবা ভাব প্রকাশ করা যায়। যেমন :
আজ ট্রেন চলবে না।
আপনি আমার সঙ্গে কথা বলবেন না।


অস্তিবাচক- নেতিবাচক বাক্যের রূপান্তর

[বাক্য রূপান্তর : বাক্যের অর্থ পরিবর্তন না করে বাক্যের প্রকাশভঙ্গি বা গঠনরীতিতে পরিবর্তন করাকেই বাক্য রূপান্তর বলা হয়। অর্থাৎ, বাক্য রূপান্তর করার সময় খেয়াল রাখতে হবে, বাক্যের অর্থ যেন পাল্টে না যায়। বাক্যের অর্থ পাল্টে গেলে বাক্যটি অন্য বাক্যে রূপান্তরিত হয়ে যাবে। কিন্তু বাক্য রূপান্তরের ক্ষেত্রে আমাদেরকে বাক্যের প্রকাশভঙ্গি বা গঠনরীতি তথা রূপ (Form) পরিবর্তন করতে হবে, বাক্যের অর্থ পরিবর্তন করা যাবে না।]

অস্তিবাচক বাক্যকে নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তরের কৌশল
ক) বিশেষণ পদের বিপরীত শব্দ ব্যবহার করে অনেক অস্তিবাচক বাক্যকে নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তর করা যায়। যেমন-
অস্তিবাচক বাক্য : তুমি খুব ভাল।
নেতিবাচক বাক্য : তুমি মোটেও খারাপ নও। (ভাল- খারাপ)

খ) ‘না করলেই নয়’, ‘না করে পারবো না’ ইত্যাদি বাক্যাংশ যোগ করে অনেক অস্তিবাচক বাক্যকে নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তর করতে হয়। যেমন-
অস্তিবাচক বাক্য : তুমি কালকে আসবে।
নেতিবাচক বাক্য : তুমি কালকে না আসলেই নয়।
অস্তিবাচক বাক্য : ইডিপিডিবিডি ওয়েবসাইটটি এতো ভাল, তুমি আবার ঢুকবেই।
নেতিবাচক বাক্য : ইডিপিডিবিডি ওয়েবসাইটটি এতো ভাল, তুমি আবার না ঢুকে পারবেই না।

গ) নতুন কোন বিপরীতার্থক বা নঞর্থক (না বোধক) শব্দ যোগ করে। যেমন-
অস্তিবাচক বাক্য :  সে বইয়ের পাতা উল্টাতে থাকল।
নেতিবাচক বাক্য : সে বইয়ের পাতা উল্টানো বন্ধ রাখলো না।


নেতিবাচক বাক্যকে অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তরের কৌশল


ক) বিশেষণ পদের বিপরীত শব্দ ব্যবহার করে অনেক নেতিবাচক বাক্যকে  অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তর করা যায়। যেমন-
নেতিবাচক বাক্য : সে ক্লাশে উপস্থিত ছিল না।
অস্তিবাচক বাক্য : সে ক্লাশে অনুপস্থিত ছিল।

খ) নেতিবাচক বাক্যের না বোধক বাক্যাংশকে কোন বিপরীতার্থক বিশেষণে রূপান্তর করেও অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তর করা যায়। যেমন-
নেতিবাচক বাক্য : দেবার্চনার কথা তিনি কোনদিন চিন্তাও করেন নি।
অস্তিবাচক বাক্য : দেবার্চনার কথা তার কাছে অচিন্ত্যনীয় ছিল।
নেতিবাচক বাক্য : এসব কথা সে মুখেও আনতে পারত না।
অস্তিবাচক বাক্য : এসব কথা তার কাছে অকথ্য ছিল।

গ) নতুন কোন অস্তিবাচক বিপরীতার্থক শব্দ যোগ করে। যেমন-
নেতিবাচক বাক্য : মা জেগে দেখে খোকা তার পাশে নেই।
অস্তিবাচক বাক্য : মা জেগে দেখে খোকা তার পাশে অনুপস্থিত।


প্রশ্নসূচক বাক্য : যে বাক্যে কোন প্রশ্ন বা জিজ্ঞাসা প্রকাশিত হয়, তাকে প্রশ্নসূচক বাক্য বলে। যেমন-
তুমি কেমন আছ?

প্রশ্নবাচক বাক্যকে নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তরের কৌশল

মূলত প্রশ্নবাচক বাক্যকে অস্তিবাচক থেকে সরাসরি নেতিবাচক বাক্যে পরিণত করলেই নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তরিত হয়ে যায়। কেবল প্রশ্নবাচক বাক্যকে অস্তিবাচক হিসেবে কল্পনা করতে হয়। আর যেগুলো সরাসরি অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তরিত হয়, সেগুলোর ক্ষেত্রে অস্তি-নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তরের নিয়মে নেতিবাচক করতে হয়। যেমন-
প্রশ্ন : তুমি কি কালকে স্কুলে এসেছিলে?
নেতি : তুমি কালকে স্কুলে আসোনি।

প্রশ্ন : ইডিপিডিবিডি ওয়েবসাইটটি কি পড়াশোনা করার জন্য খারাপ?
নেতি : ইডিপিডিবিডি ওয়েবসাইটটি পড়াশোনা করার জন্য খারাপ না।

প্রশ্ন : তুমি কি ছবিটা দেখোনি?
নেতি : তুমি ছবিটা না দেখে পারোনি।

প্রশ্নবাচক বাক্যকে অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তর

কিছু প্রশ্নবাচক বাক্যকে স্বাভাবিকভাবে সরাসরি অস্তিবাচক থেকে প্রশ্নবাচকে রূপান্তরিত করা যায়। আর যেগুলো সরাসরি রূপান্তর করলে নেতিবাচক হয়, সেগুলোকে নেতি থেকে অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তরের নিয়মে অস্তিবাচক করতে হয়। যেমন-

প্রশ্ন : তুমি কি ছবিটা দেখোনি?
অস্তি : তুমি ছবিটা দেখেছো।

প্রশ্ন : তুমি কি কালকে স্কুলে এসেছিলে?
অস্তি : তুমি কালকে স্কুলে অনুপস্থিত ছিলে।

অস্তি-নেতিবাচক (বিবৃতিমূলক) বাক্যকে প্রশ্নবাচক বাক্যে রূপান্তর

বিবৃতিমূলক বাক্যে প্রশ্নসূচক অব্যয় যুক্ত করে সেগুলোকে বিপরীত বাক্যে (অস্তি হলে নেতি এবং নেতি হলে অস্তিবাচকে) সরাসরি রূপান্তর করলেই বাক্য রূপান্তর সম্পন্ন হয়। যেমন-

বিবৃতি : তুমি কালকে স্কুলে অনুপস্থিত ছিলে।
প্রশ্নসূচক অব্যয় যুক্ত করে : তুমি কি কালকে স্কুলে অনুপস্থিত ছিলে?
প্রশ্ন : তুমি কি কালকে স্কুলে উপস্থিত ছিলে?/ তুমি কি কালকে স্কুলে এসেছিলে?

বিবৃতি : তুমি ছবিটা দেখোনি।
প্রশ্নসূচক অব্যয় যুক্ত করে : তুমি কি ছবিটা দেখোনি?
প্রশ্ন : তুমি কি ছবিটা দেখেছো?

বিস্ময়সূচক বাক্য : যে বাক্যে আশ্চর্য হওয়ার অনুভূতি প্রকাশিত হয়, তাকে বিস্ময়সূচক বাক্য বলে। যেমন-
সে কী ভীষণ ব্যাপার!

ইচ্ছাসূচক বাক্য : যে বাক্যে শুভেচ্ছা, প্রার্থণা, আশীর্বাদ, আকাঙক্ষা প্রকাশ করা হয়, তাকে ইচ্ছাসূচক বাক্য বলে। যেমন-
তোমার মঙ্গল হোক। ঈশ্বর সকলের মঙ্গল করচন। ভালো থেকো।
আদেশ বাচক বাক্য : যে বাক্যে আদেশ করা হয়, তাকে আদেশ সূচক বাক্য বলে। যেমন-
বের হয়ে যাও। ওখানে বসো। জানালা লাগাও। সবসময় দেশের কথা মাথায় রেখে কাজ করবে।


গঠন অনুযায়ী বাক্যের শ্রেণীবিভাগ

গঠন অনুযায়ী বাক্য ৩ প্রকার- সরল বাক্য, জটিল বা মিশ্র বাক্য ও যৌগিক বাক্য।

সরল বাক্য : যে বাক্যে একটি কর্তা বা উদ্দেশ্য ও একটি সমাপিকা ক্রিয়া থাকে, তাকে সরল বাক্য বলে। যেমন-
পুকুরে পদ্ম ফোটে। (উদ্দেশ্য- পুকুরে, সমাপিকা ক্রিয়া- ফোটে)
মা শিশুকে ভালোবাসে।  (উদ্দেশ্য- মা, সমাপিকা ক্রিয়া- ভালোবাসে)

ছেলেরা মাঠে খেলতে খেলতে হঠাৎ করে সবাই মিলে গাইতে শুরচ করলে বড়রা ওদেরকে আচ্ছামত বকে দিল। (উদ্দেশ্য- বড়রা, সমাপিকা ক্রিয়া- (বকে) দিল) (অন্য ক্রিয়াগুলোর সবগুলোই অসমাপিকা ক্রিয়া। তাই সেগুলো বাক্যের গঠনে কোনো প্রভাব ফেলে না।)

সরল বাক্য চেনার সহজ উপায় হলো, সরল বাক্যে একটিই সমাপিকা ক্রিয়া থাকে। কারণ, সরল বাক্যের ভেতরে কোন খণ্ডবাক্য বা একাধিক পূর্ণবাক্য থাকে না।

জটিল বা মিশ্র বাক্য : যে বাক্যে একটি প্রধান খণ্ডবাক্য ও তাকে আশ্রয় বা অবলম্বন করে একাধিক খণ্ডবাক্য থাকে, তাকে জটিল বা মিশ্র বাক্য বলে।

জটিল বাক্যে একাধিক খণ্ডবাক্য থাকে। এদের মধ্যে একটি প্রধান থাকে, এবং অন্যগুলো সেই বাক্যের উপর নির্ভর করে। প্রতিটি খ-বাক্যের পরে কমা (,) বসে। যেমন-
যে পরিশ্রম করে,/ সে-ই সুখ লাভ করে। (প্রথম অংশটি আশ্রিত খণ্ডবাক্য, দ্বিতীয়টি প্রধান খণ্ডবাক্য)
যত পড়বে,/ তত শিখবে,/ তত ভুলবে। (প্রথম দুটি অংশ আশ্রিত খণ্ডবাক্য, শেষ অংশটি প্রধান খণ্ডবাক্য)

জটিল বা মিশ্র বাক্য চেনার সহজ উপায় হল, এ ধরনের বাক্যে সাধারণত যে- সে, যত- তত, যারা- তারা, যাদের- তাদের, যখন- তখন - এ ধরনের সাপেক্ষ সর্বনাম পদ থাকে। দুইটি অব্যয় যদি অর্থ প্রকাশের জন্য পরস্পরের উপর নির্ভর করে, তবে তাকে সাপেক্ষ সর্বনাম বলে। আবার যদি- তবু, অথচ- তথাপি- এ রকম কিছু পরস্পর সাপেক্ষ সর্বনাম/অব্যয়ও জটিল/মিশ্র বাক্যে ব্যবহৃত হয়।তবে এ ধরনের অব্যয় ছাড়াও জটিল বা মিশ্র বাক্য হতে পারে।

যৌগিক বাক্য : একাধিক সরল বাক্য কোন অব্যয় দ্বারা সংযুক্ত হয়ে একটি বাক্য গঠন করলে তাকে যৌগিক বাক্য বলে। যেমন-
তার বয়স হয়েছে, কিন্তু বুদ্ধি হয়নি। (সরল বাক্য দুটি- তার বয়স হয়েছে, তার বুদ্ধি হয়নি)
সে খুব শক্তিশালী এবং বুদ্ধিমান। (সরল বাক্য দুটি- সে খুব শক্তিশালী, সে খুব বুদ্ধিমান)

যৌগিক বাক্যে এবং, ও, আর, কিন্তু, অথবা, অথচ, কিংবা, বরং, তথাপি- এই অব্যয়গুলো দিয়ে দুটি সরল বাক্য যুক্ত হয়। এগুলো দেখে সহজেই যৌগিক বাক্যকে চেনা যেতে পারে। তবে কোন অব্যয় ছাড়াও দুটি সরল বাক্য একসঙ্গে হয়ে যৌগিক বাক্য গঠন করতে পারে।

[একাধিক বাক্য বা খণ্ড বাক্য নিয়ে কোনো বাক্য তৈরি হলে এবং খণ্ড বাক্যগুলোর মধ্যে েপরস্পর নির্ভরতা থাকলে ঐ ধরনের বাক্যকে জটিল বাক্য বলে।]


সরল-জটিল-যৌগিক বাক্যের রূপান্তর




[বাক্য রূপান্তর : বাক্যের অর্থ পরিবর্তন না করে বাক্যের প্রকাশভঙ্গি বা গঠনরীতিতে পরিবর্তন করাকেই বাক্য রূপান্তর বলা হয়। অর্থাৎ, বাক্য রূপান্তর করার সময় খেয়াল রাখতে হবে, বাক্যের অর্থ যেন পাল্টে না যায়। বাক্যের অর্থ পাল্টে গেলে বাক্যটি অন্য বাক্যে রূপান্তরিত হয়ে যাবে। কিন্তু বাক্য রূপান্তরের ক্ষেত্রে আমাদেরকে বাক্যের প্রকাশভঙ্গি বা গঠনরীতি তথা রূপ (Form) পরিবর্তন করতে হবে, বাক্যের অর্থ পরিবর্তন করা যাবে না।]

সরল থেকে জটিল বাক্যে রূপান্তর : সরল বাক্যের কোন একটি অংশকে সম্প্রসারিত করে একটি খন্ডবাক্যে রূপান্তরিত করতে হয় এবং তার খণ্ডবাক্যটির সঙ্গে মূল বাক্যের সংযোগ করতে উপরোক্ত সাপেক্ষ সর্বনাম বা সাপেক্ষ অব্যয়গুলোর কোনটি ব্যবহার করতে হয়। যেমন-

সরল বাক্য : ভাল ছেলেরা কম্পিউটারে বসেও ইন্টারনেটে পড়াশুনা করে।
জটিল বাক্য : যারা ভাল ছেলে, তারা কম্পিউটারে বসেও ইন্টারনেটে পড়াশুনা করে।

সরল বাক্য : ভিক্ষুককে ভিক্ষা দাও।
জটিল বাক্য : যে ভিক্ষা চায়, তাকে ভিক্ষা দাও।

জটিল থেকে সরল বাক্যে রূপান্তর : জটিল বাক্যটির অপ্রধান/ আশ্রিত খণ্ডবাক্যটিকে একটি শব্দ বা শব্দাংশে পরিণত করে সরল বাক্যে রূপান্তর করতে হয়। যেমন-

জটিল বাক্য : যত দিন বেঁচে থাকব, এ কথা মনে রাখব।
সরল বাক্য : আজীবন এ কথা মনে রাখব।

জটিল বাক্য : যদি দোষ স্বীকার কর তাহলে তোমাকে কোন শাস্তি দেব না।
সরল বাক্য : দোষ স্বীকার করলে তোমাকে কোন শাস্তি দেব না।

সরল থেকে যৌগিক বাক্যে রূপান্তর : সরল বাক্যের কোন অংশকে সম্প্রসারিত করে একটি পূর্ণ বাক্যে রূপান্তরিত করতে হয় এবং পূর্ণ বাক্যটির সঙ্গে মূল বাক্যের সংযোগ করতে উপরোক্ত অব্যয়গুলো ব্যবহার করতে হবে। যেমন-

সরল বাক্য : দোষ স্বীকার করলে তোমাকে কোন শাস্তি দেব না।
যৌগিক বাক্য : দোষ স্বীকার কর, তাহলে তোমাকে কোন শাস্তি দেব না। (এক্ষেত্রে ‘তাহলে’ অব্যয়টি ব্যবহার না করলেও চলতো)

সরল বাক্য : আমি বহু কষ্টে শিক্ষা লাভ করেছি।
যৌগিক বাক্য : আমি বহু কষ্ট করেছি এবং/ ফলে শিক্ষা লাভ করেছি।

যৌগক থেকে সরল বাক্যে রূপান্তর : যৌগিক বাক্যে একাধিক সমাপিকা ক্রিয়া থাকে। অন্যদিকে সরল বাক্যে একটিই সমাপিকা ক্রিয়া থাকে। তাই যৌগিক বাক্যের একটি সমাপিকা ক্রিয়াকে অপরিবর্তিত রেখে বাকিগুলোকে সমাপিকা ক্রিয়ায় পরিণত করতে হবে। যৌগিক বাক্যে একাধিক পূর্ণ বাক্য থাকে এবং তাদের সংযোগ করার জন্য একটি অব্যয় পদ থাকে। সেই অব্যয়টি বাদ দিতে হবে। যেমন-

যৌগিক বাক্য : তার বয়স হয়েছে, কিন্তু বুদ্ধি হয়নি। (সমাপিকা ক্রিয়া- হয়েছে, হয়নি)
সরল বাক্য : তার বয়স হলেও বুদ্ধি হয়নি। (‘হয়েছে’ সমাপিকা ক্রিয়াকে ‘হলেও’ অসমাপিকা ক্রিয়ায় রূপান্তরিত করা হয়েছে)

যৌগিক বাক্য : মেঘ গর্জন করে, তবে ময়ূর নৃত্য করে। (সমাপিকা ক্রিয়া- করে ও করে)
সরল বাক্য : মেঘ গর্জন করলে ময়ূর নৃত্য করে। (‘করে’ সমাপিকা ক্রিয়াকে ‘করলে’ অসমাপিকা ক্রিয়ায় রূপান্তরিত করা হয়েছে)
[সমাপিকা ও অসমাপিকা ক্রিয়া; ক্রিয়াপদ]

জটিল থেকে যৌগিক বাক্যে রূপান্তর : জটিল বাক্যে কয়েকটি খণ্ডবাক্য থাকে, এবং সেগুলো পরস্পর নির্ভরশীল থাকে। জটিল বাক্যকে যৌগিক বাক্যে রূপান্তর করতে হলে এই খণ্ডবাক্যগুলোর পরস্পর নির্ভরতা মুছে দিয়ে স্বাধীন করে দিতে হবে। এজন্য সাপেক্ষ সর্বনাম বা অব্যয়গুলো তুলে দিয়ে যৌগিক বাক্যে ব্যবহৃত অব্যয়গুলোর মধ্যে উপযুক্ত অব্যয়টি বসাতে হবে। পাশাপাশি ক্রিয়াপদের গঠনের দিকে খেয়াল রাখতে হবে। যেমন-

জটিল বাক্য : যদি সে কাল আসে, তাহলে আমি যাব।
যৌগিক বাক্য : সে কাল আসবে এবং আমি যাব।

জটিল বাক্য : যদিও তাঁর টাকা আছে, তবুও তিনি দান করেন না।
যৌগিক বাক্য : তাঁর টাকা আছে, কিন্তু তিনি দান করেন না।

যৌগিক থেকে জটিল বাক্যে রূপান্তর : যৌগিক বাক্যে দুইটি পূর্ণ বাক্য কোন অব্যয়ের দ্বারা যুক্ত থাকে। এই অব্যয়টি তুলে দিয়ে সাপেক্ষ সর্বনাম বা অব্যয়ের প্রথমটি প্রথম বাক্যের পূর্বে ও দ্বিতীয়টি দ্বিতীয় বাক্যের পূর্বে বসালেই জটিল বাক্যে রূপান্তরিত হবে।

তবে, সাপেক্ষ সর্বনাম বা অব্যয়গুলোর পূর্ণ বাক্য দুটির প্রথমেই বসাতে হবে, এমন কথা নেই; উপযুক্ত যে কোন জায়গাতেই বসানো যেতে পারে। যেমন-

যৌগিক বাক্য : দোষ স্বীকার কর, তোমাকে কোন শাস্তি দেব না।
জটিল বাক্য : যদি দোষ স্বীকার কর, তাহলে তোমাকে কোন শাস্তি দেব না।

যৌগিক বাক্য : তিনি অত্যন্ত দরিদ্র, কিন্তু তার হৃদয় অত্যন্ত মহৎ।
জটিল বাক্য : যদিও তিনি অত্যন্ত দরিদ্র, তবুও তার হৃদয় অত্যন্ত মহৎ।

যৌগিক বাক্য : এ গ্রামে একটি দরগাহ আছে, সেটি পাঠানযুগে নির্মিত।
জটিল বাক্য : এ গ্রামে যে দরগাহটি আছে, সেটি পাঠানযুগে নির্মিত।

ভাষা অনুশীলন; ১ম পত্র থেকে

শকুন্তলা
ক) নেতিবাচক থেকে অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তর

নেতি : এ আশ্রমমৃগ, বধ করিবেন না।
অস্তি : এ আশ্রমমৃগ, বধ করা থেকে বিরত হোন।

নেতি : আপনকার বাণ অল্পপ্রাণ মৃগশাবকের উপর নিক্ষিপ্ত হইবার যোগ্য নহে।
অস্তি : আপনকার বাণ অল্পপ্রাণ মৃগশাবকের উপর নিক্ষিপ্ত হইবার অযোগ্য।

নেতি : না মহারাজ, তিনি আশ্রমে নাই।
অস্তি : হ্যাঁ মহারাজ, তিনি আশ্রমের বাইরে আছেন।
(বাক্যের শুরুতে ‘না’ শব্দটি না থাকলে ‘তিনি আশ্রমে অনুপস্থিত’ হতে পারতো। কিন্তু এক্ষেত্রে ‘অনুপস্থিত’ বলতে গেলে শুরুতে ‘না’ বলতে হবে। তখন বাক্যটি আর অস্তিবাচক হবে না, কারণ নেতিবাচক শব্দ ‘না’ বাক্যে থেকে যাবে। তাই এক্ষেত্রে সেটি সঠিক হবে না।)

নেতি : কেহ কহিয়া দিতেছে না।
অস্তি : সকলে নীরব থাকিতেছে।

নেতি : এরূপ রূপবতী রমণী আমার অন্তঃপুরে নাই।
অস্তি : আমার অন্তঃপুর এরূপ রূপবতী রমনী-বিবর্জিত।

খ) অস্তিবাচক থেকে নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তর

অস্তি : উদ্যানলতা, সৌন্দর্যগুণে, বনলতার নিকট পরাজিত হইল।
নেতি : উদ্যানলতা, সৌন্দর্যগুণে, বনলতার নিকট পরাজিত না হইয়া পারিল না।

অস্তি : কণ্ব আশ্রমপাদপদিগকে তোমা অপেক্ষা অধিক ভালোবাসেন।
নেতি : কণ্ব আশ্রমপাদপদিগকে তোমা অপেক্ষা অধিক না ভালোবাসিয়া পারেন না।

অস্তি : আমারও ইহাদের উপর সহোদর স্নেহ আছে।
নেতি : আমারও যে ইহাদের উপর সহোদর স্নেহ নাই তাহা নহে।

অস্তি : এই জন্যই তোমাকে সকলে প্রিয়ংবদা বলে।
নেতি : এই জন্যই তোমাকে সকলে প্রিয়ংবদা না বলে পারে না।

অস্তি : প্রিয়ংবদা যথার্থ কহিয়াছে।
নেতি : প্রিয়ংবাদ অযথার্থ কহে নাই।
গ) জটিল থেকে সরল বাক্যে রূপান্তর

জটিল : কেহ কহিয়া দিতেছে না, তথাপি তপোবন বলিয়া বোধ হইতেছে।
সরল : কেহ কহিয়া না দিলেও তপোবন বলিয়া বোধ হইতেছে।

জটিল : শরাসনে যে শর সংহিত করিয়াছেন, আশু তাহার প্রতিসংহার করুন।
সরল : শরাসনে সংহিত শর আশু প্রতিসংহার করুন।

জটিল : যদি কার্যক্ষতি না হয়, তথায় গিয়া অতিথি সৎকার করুন।
সরল : কার্যক্ষতি না হইলে তথায় গিয়া অতিথি সৎকার করুন।

জটিল : ইহারা যেরূপ, এরূপ রূপবতী রমণী আমার অন্তঃপুরে নাই।
সরল : ইহাদের মতো রূপবতী রমণী আমার অন্তঃপুরে নাই।

জটিল : তুমি নবমালিকা কুসুমকোমলা, তথাপি তোমায় আলবালজলসেচনে নিযুক্ত করিয়াছেন।
সরল : তুমি নবমালিকা কুসুমকোমলা হওয়া সত্ত্বেও তোমায় আলবালজলসেচনে নিযুক্ত করিয়াছেন।

কমলাকান্তের জবানবন্দী
সরল থেকে জটিল বাক্যে রূপান্তর

সরল : ফরিয়াদী প্রসন্ন গোয়ালিনী।
জটিল : যে ফরিয়াদী, সে প্রসন্ন গোয়ালিনী।

সরল : সাক্ষীটা কী একটা গণ্ডগোল বাধাইতেছে।
জটিল : যে সাক্ষী, সে একটা গণ্ডগোল বাধাইতেছে।

সরল : আমার নিবাস নাই।
জটিল : যা নিবাস, তা আমার নাই।

সরল : তোমার বাপের নাম কী?
জটিল : তোমার যিনি বাপ, তার নাম কী?

সরল : আমি এ সাক্ষী চাই না।
জটিল : যে সাক্ষী এ রকম, তাকে আমি চাই না।

সরল : কমলাকান্ত পিতার নাম বলল।
জটিল : যিনি কমলাকান্তের পিতা, সে তাঁর নাম বলল।

সরল : কোনো কথা গোপন করিব না।
জটিল : যাহা বলিব, তাহার মধ্যে কোনো কথা গোপন করিব না।

সরল : উকিলবাবু চুপ করিয়া বসিয়া পড়িলেন।
জটিল : যিনি উকিলবাবু, তিনি চুপ করিয়া বসিয়া পড়িলেন।

হৈমন্তী

ক) অস্তিবাচক থেকে নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তর

অস্তি : বিবাহ সম্বন্ধে আমার মত যাচাই করা অনাবশ্যক ছিল।
নেতি : বিবাহ সম্বন্ধে আমার মত যাচাই করা আবশ্যক ছিল না।

অস্তি : পঞ্জিকার পাতা উল্টাইতে থাকিল।
নেতি : পঞ্জিকার পাতা উল্টানো বন্ধ রহিল না।

অস্তি : শ্বশুরের ও তাহার মনিবের উপর রাগ হইল।
নেতি : শ্বশুরের ও তাহার মনিবের উপর রাগ না হইয়া পারিলাম না।

অস্তি : আমার বুকের ভেতরটা হু হু করিয়া উঠিল।
নেতি : আমার বুকের ভেতরটা হু হু করিয়া না উঠিয়া পারিল না।

অস্তি : হৈমন্তী চুপ করিয়া রহিল।
নেতি : হৈমন্তী কোনো কথা কহিতে পারিল না।

অস্তি : হৈম কিছু না বলিয়া একটু হাসিল।
নেতি : হৈম কিছু একটু হাসিল, কিছু বলিল না।

অস্তি : সে বাপকে যত চিঠি লিখিত আমাকে দেখাইত।
নেতি : সে বাপকে যত চিঠি লিখিত সেগুলি আমাকে না দেখাইয়া পারিত না।

অস্তি : তাহার মন একেবারে কাঠ হইয়া গেল।
নেতি : তাহার মন কাঠ না হইয়া পারিল না।

খ) নেতিবাচক থেকে অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তর

নেতি : দেশের প্রচলিত ধর্মকর্মে তাঁহার আস্থা ছিল না।
অস্তি : দেশের প্রচলিত ধর্মকর্মে তাঁহার অনাস্থা ছিল।

নেতি : আমার প্রণাম লইবার জন্য সবুর করিলেন না।
অস্তি : আমার প্রণাম লইবার পূর্বেই প্রস্থান করিলেন।

নেতি : কিন্তু বরফ গলিল না।
অস্তি : কিন্তু বরফ অগলিত রহিল।

নেতি : হৈম তাহার অর্থ বুঝিল না।
অস্তি : হৈম তাহার অর্থ বুঝিতে অক্ষম।

নেতি : দেবার্চনার কথা কোনদিন তিনি চিন্তাও করেন নাই।
অস্তি : দেবার্চনার কথা তাঁর কাছে অচিন্ত্যনীয় ছিল।

নেতি : এসব কথা সে মুখে আনিতে পারিত না।
অস্তি : এসব কথা তার মুখে আনারও যোগ্য ছিল না।

নেতি : বইগুলি হৈমর সঙ্গে একত্রে মিলিয়া পড়া অসম্ভব ছিল না।
অস্তি : বইগুলি হৈমর সঙ্গে একত্রে মিলিয়া পড়া সম্ভব ছিল।

নেতি : দেখি, সে বিছানায় নাই।
অস্তি : দেখি, সে বিছানায় অনুপস্থিত।

গ) যৌগিক থেকে সরল বাক্যে রূপান্তর

যৌগিক : কন্যার বাপ সবুর করিতে পারিতেন, কিন্তু বরের বাপ সবুর করিতে চাহিলেন না।
সরল : কন্যার বাপ সবুর করিতে পারিলেও বরের বাপ সবুর করিতে চাহিলেন না।

যৌগিক : আমি ছিলাম বর, সুতরাং বিবাহ সম্বন্ধে আমার মত যাচাই করা অনাবশ্যক ছিল।
সরল : আমি বর ছিলাম বলে বিবাহ সম্বন্ধে আমার মত যাচাই করা অনাবশ্যক ছিল।

যৌগিক : শিশিরের বয়স যথাসময়ে ষোলো হইল; কিন্তু সেটা স্বভাবের ষোলো।
সরল : শিশিরের বয়স যথাসময়ে ষোলো হইলেও সেটা ছিল স্বভাবের ষোলো।

যৌগিক : তোমাকে এই কটি দিন মাত্র জানিলাম, তবু তোমার হাতেই ও রহিল।
সরল : তোমাকে এই কটি দিন মাত্র জানিলেও তোমার হাতেই ও রহিল।

বিলাসী

ক) নেতিবাচক থেকে প্রশ্নবাচক বাক্যে রূপান্তর

নেতি : তাদের গ্রামে ফিরিয়া আসা চলে না।
প্রশ্ন : তাদের গ্রামে ফিরিয়া আসা চলে কি?

নেতি : এ খবর আমরা কেহই জানিতাম না।
প্রশ্ন : এ খবর আমাদের কেহই কি জানিত?

নেতি : মানুষটা সমস্ত রাত খেতে পাবে না।
প্রশ্ন : মানুষটা সমস্ত রাত খেতে পাবে কি?

নেতি : সরস্বতী বর দেবেন না।
প্রশ্ন : সরস্বতী বর দেবেন কি?

নেতি : তাদের সে জ্বালা নাই।
প্রশ্ন : তাদের সে জ্বালা আছে কি?

নেতি : তাহার ফোর্থ ক্লাসে পড়ার ইতিহাস কখনো শুনি নাই।
প্রশ্ন : তাহার ফোর্থ ক্লাসে পড়ার ইতিহাস কখনো শুনিয়াছি কি?

নেতি : একথা কোনো বাপ ভদ্রসমাজে কবুল করিতে চাহিত না।
প্রশ্ন : একথা কোনো বাপ ভদ্রসমাজে কবুল করিতে চাহিত কি?

নেতি : অনেকদিন মৃত্যুঞ্জয়ের দেখা নাই।
প্রশ্ন : অনেকদিন মৃত্যুঞ্জয়ের কোনো দেখা আছে কি?

খ) প্রশ্নবাচক থেকে অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তর

প্রশ্ন : তেমন সব ভদ্রলোকই বা কী সুখে গ্রাম ছাড়িয়া পলায়ন করেন?
অস্তি : তেমন সব ভদ্রলোকই বা কী সুখে গ্রাম ছাড়িয়া পলায়ন করেন জানিতে চাই।

প্রশ্ন : কামস্কাটকার রাজধানীর নাম কি?
অস্তি : কামস্কাটকার রাজধানীর নাম কী তা জানতে চাই।

প্রশ্ন : একলা যেতে ভয় করবে না তো?
অস্তি : একলা যেতে ভয় করবে কি না জানতে চাই।

গ) প্রশ্নবাচক থেকে নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তর

প্রশ্ন : পুলিশের লোক জানিবে কী করিয়া?
নেতি : পুলিশের লোক জানিবে না।

প্রশ্ন : তাহারা কি পাষাণ?
নেতি : তাহারা পাষাণ নয়।

প্রশ্ন : এতে দোষ কী?
নেতি : এতে দোষ নেই।

প্রশ্ন : তিনি স্বেচ্ছায় যখন সহমরণে যাইতে চাহিতেছেন, তখন সরকারের কী? তাঁর যে আর তিলার্ধ বাঁচিতে সাধ নাই, এ কি তাহারা বুঝিবে না? তাহাদের ঘরে কি স্ত্রী নাই? তাহারা কি পাষাণ?
নেতি : তিনি স্বেচ্ছায় যখন সহমরণে যাইতে চাহিতেছেন, তখন সরকারের তো কিছু না। তাঁর যে আর তিলার্ধ বাঁচিতে সাধ নাই, এ তাহারা বুঝিবে। তাহাদের ঘরেও তো স্ত্রী আছে। তাহারা তো পাষাণ নয়।

কলিমদ্দি দফাদার

ক) অস্তিবাচক থেকে নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তর

অস্তি : কোথাও তক্তা অদৃশ্য হয়ে যায়।
নেতি : কোথাও তক্তা অদৃশ্য না হয়ে যায় না।

অস্তি : কাঠের পুলের অবস্থাও ওরকম।
নেতি : কাঠের পুলের অবস্থাও অন্যরকম নয়।

অস্তি : ধান চালের দাম বাড়লে উপোস করতে হয়।
নেতি : ধান চালের দাম বাড়লে উপোস না করে চলে না।

অস্তি : যখনকার সরকার তখনকার হুকুম পালন করি।
নেতি : যখনকার সরকার তখনকার হুকুম পালন না করলেই নয়।

অস্তি : আজ ঐ গ্রামটাকে শায়েস্তা করতে হবে।
নেতি : আজ ঐ গ্রামটাকে শায়েস্তা না করলেই নয়।

অস্তি : আত্মরক্ষা করতে হবে।
নেতি : আত্মরক্ষা না করলেই নয়।

অস্তি : সপ্তাহে একদিন তাকে থানায় হাজিরা দিতে হয়।
নেতি : সপ্তাহে একদিন তাকে থানায় হাজিরা না দিলে চলে না।

অস্তি : একটি বাঁশও উধাও হয়ে গেছে।
নেতি : একটি বাঁশও নেই।

খ) নেতিবাচক থেকে অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তর

নেতি : এক পা দু পা করে  না এগিয়ে পারে না।
অস্তি : এক পা দু পা করে এগিয়ে যেতেই হয়।

নেতি : তক্তাসুদ্ধই সে নিচে না পড়ে পারল না।
অস্তি : তক্তাসুদ্ধই সে নিচে পড়ে গেল।

নেতি : কলিমদ্দি সে সব জানে না।
অস্তি : কলিমদ্দির সে সব অজানা।

নেতি : সে গুলি চালানোয় অভ্যস্ত নয়।
অস্তি : সে গুলি চালানোয় অনভ্যস্ত।

নেতি : সে সাঁতার জানে না।
অস্তি : সে সাঁতার কাটতে অক্ষম।/সে সাঁতার সম্পর্কে অজ্ঞ।

নেতি : কলিমদ্দি কারো কাছে হাত পাতে না।
অস্তি : কলিমদ্দি কারো কাছে হাত পাতা থেকে বিরত থাকে।

নেতি : খান সেনারা তার রহস্য ভেদ করতে পারে না।
অস্তি : খান সেনাদের কাছে সেটা রহস্যই থেকে যায়।

নেতি : আশেপাশে কোন শব্দ নেই।
অস্তি : চারপাশ নিঃশব্দ/শব্দহীন।


একটি তুলসী গাছের কাহিনী

ক) অস্তিবাচক থেকে নেতিবাচক বাক্যে রূপান্তর
অস্তি : সে কথাই এরা ভাবে।
নেতি : সে কথাই এরা না ভেবে পারে না।

অস্তি : বাড়িটা তারা দখল করেছে।
নেতি : বাড়িটা তারা দখল না করে ছাড়ে না।

অস্তি : কথাটায় তার বিশ্বাস হয়।
নেতি : কথাটায় তার অবিশ্বাস হয় না।

অস্তি : তবে নালিশটা অযৌক্তিক।
নেতি : তবে নালিশটা যৌক্তিক নয়।

অস্তি : সে তারস্বরে আর্তনাদ করে।
নেতি : সে তারস্বরে আর্তনাদ না করে পারে না।

খ) নেতিবাচক বাক্য থেকে অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তর
নেতি : তারা যাবে না কোথাও।
অস্তি : তারা এখানেই থাকবে।

নেতি : কারো মুখে কোন কথা সরে না।
অস্তি : প্রত্যেকেই নীরব হয়ে থাকে।

নেতি : সেখানে কেউ নেই।
অস্তি : জায়গাটা নির্জন।

নেতি : কথাটা না মেনে উপায় নেই।
অস্তি : কথাটা মানতেই হয়।

নেতি : তাদের ভুলটা ভাঙতে দেরি হয় না।
অস্তি : অচিরেই তাদের ভুল ভাঙে।

নেতি : সন্দেহ থাকে না যে তুলসী গাছটার যত্ন নিচ্ছে কেউ।
অস্তি : এটা নিশ্চিত যে তুলসী গাছটার যত্ন নিচ্ছে কেউ।

নেতি : সে একটু বিস্মিত না হয়ে পারে না।
অস্তি : তাকে একটু বিস্মিত হতেই হয়।

নেতি : গাছটি উপড়ানোর জন্যে কারো হাত এগিয়ে আসে না।
অস্তি : গাছটি উপড়াতে সবার হাত নিষ্ক্রিয় থাকে।/সবাই গাছটি উপড়াতে নিষ্ক্রিয় থাকে।

নেতি : হয়তো তার যাত্রা শেষ হয় নাই।
অস্তি : হয়তো তার যাত্রা এখনো চলছে।

নেতি : হিন্দু রীতিনীতি এদের তেমন ভাল জানা নেই।
অস্তি : হিন্দু রীতিনীতি এদের কাছে অনেকটাই অজানা।

একুশের গল্প

নেতিবাচক বাক্যকে অস্তিবাচক বাক্যে রূপান্তর

নেতি : ওকে চেনাই যায় না।
অস্তি : ওকে চিনতে আমরা অক্ষম।

নেতি : এ অবস্থায় কেউ কাউকে চিনতে পারে না।
অস্তি : এ অবস্থায় সবাই সবাইকে চিনতে অক্ষম।

নেতি : এ কথা ভুলেও ভাবি নি কোনদিন।
অস্তি : এ কথা সবসময়ই আমার ভাবনার অতীত ছিল।

নেতি : ওদের কাউকে পাওয়া যায় নি।
অস্তি : ওর সবাই নিখোঁজ।

নেতি : আমরা বাধা দিতে পারলাম না।
অস্তি : আমরা বাধা দিতে অক্ষম ছিলাম।

নেতি : আমরা নড়লাম না।
অস্তি : আমরা অনড় থাকলাম।


ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত বছরের প্রশ্ন

  • যৌগিক বাক্য কোনটি? (ঘ-২০০৩-০৪)
  • ‘কেউ বলে না দিলেও মনে হচ্ছে এটি একটি বিপজ্জনক জায়গা।’ বাক্যটি (ঘ-২০০০-০১)
  • ‘কেউ কিছু বলছে না।’- বাক্যটির অসিত্মবাচক রূপ (ঘ-২০০৪-০৫)
  • সরল বাক্য কোনটি? (ঘ-২০০৪-০৫)
  • ‘যে নেতা দেশের মঙ্গল বোঝেন না, তিনি নিজের কল্যাণ অনুধাবনেও ব্যর্থ’ বাক্যটি- (ঘ-২০০৬-০৭)
  • ‘হৈম কিছু না বলিয়া একটু হাসিল।’- বাক্যটির নেতিবাচক রূপ (ঘ-২০১০-১১)
  • ‘মেঘ গর্জন করলে ময়ূর নৃত্য করে’- এ বাক্যটির ধরন: (গ-২০০৫-০৬)
  • ‘যে হিমালয়ে বাস করিতেন, সেই হিমালয়েল তিনি যেন মিতা।’ বাক্যটি- জটিল (ঘ-২০১০-১১)
  • যৌগিক বাক্যের উদাহরণ (ক-২০০৫-০৬)
  • তুমি যেতে পারবে না।Ñ এই বাক্যের অস্তিবাচক রূপ হবেÑ (ক-২০০৬-০৭)
  • ‘পুলিশের লোক জানবে না।’- নেতিবাচক বাক্যটির প্রশ্নবাচক বাক্য- (ক-২০০৬-০৭)
অনলাইন এ ক্লাস করুন একদম ফ্রী. …
(প্রতিদিন রাত ৯টা থেকে ১০.৩০টা পর্যন্ত)
Skype id - wschoolbd


Web School BD

বাংলাদেশের প্রথম অনলাইন ভিত্তিক ট্রেনিং সেন্টার "Web School BD". ওয়েব স্কুল বিডি : https://www.webschool.com.bd

Post a Comment

আপনার কোন কিছু জানার থাকলে কমেন্টস বক্স এ লিখতে পারেন। আমরা যথাযত চেস্টা করব আপনার সঠিক উত্তর দিতে। ভালো লাগলে ধন্যবাদ দিতে ভুলবেন না। শিক্ষার্থীরা নোট ,সাজেশান্স ও নতুন নতুন ভিডিও সবার আগে পেতে আমাদের Web School BD চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব SUBSCRIBE করতে পারো।
- শুভকামনায় ওয়েব স্কুল বিডি

Previous Post Next Post