এইচ এস সি বাংলা কবিতা –কবর

ওয়েব স্কুল বিডি : সুপ্রিয় শিক্ষার্থী বন্ধুরা, শুভেচ্ছা নিয়ো। আজ তোমাদের এইচ এস সি বাংলা কবিতা – কবর ধারণা নিয়ে আলোচনা করা হলো

অনলাইন এক্সামের বিভাগসমূহ:
জে.এস.সি
এস.এস.সি
এইচ.এস.সি
সকল শ্রেণির সৃজনশীল প্রশ্ন (খুব শীঘ্রই আসছে)
বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি (খুব শীঘ্রই আসছে)
বিসিএস প্রিলি টেষ্ট

এইচ এস সি বাংলা কবিতা –কবর
জসীমউদদীন

প্রথম প্রকাশ- কল্লোল পত্রিকায়; তখন কবি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের বি.এ. ক্লাশের ছাত্র
কাব্যগ্রন্থ- রাখালী
ছন্দ- ষান্মাত্রিক মাত্রাবৃত্ত; প্রতি চরণে ৩টি পূর্ণ পর্ব ও ১টি অপূর্ণ পর্ব আছে; পূর্ণ পর্বের মাত্রা ৬ ও অপূর্ণ পর্ব ২ মাত্রার; মাত্রা বিন্যাস- ৬+৬+৬+২=২০
কবি ছাত্র থাকা অবস্থায়ই কবিতাটি প্রবেশিকা (এস.এস.সি.) পাঠ্যতালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়।

মূল/কাহিনী বর্ণনাকারী- বুড়ো দাদু/বৃদ্ধ কৃষক
শ্রোতা- নাতি
মারা গেছেন- মোট ৫ জন
বর্ণনার অনুক্রম- দাদি˃  বাবা˃ মা˃ বুজি˃ ছোট ফুপু (নাতির সঙ্গে সম্পর্ক বিবেচনায়)
             স্ত্রী˃ পুত্র˃ পুত্রবধূ˃ নাতনি˃ মেয়ে (দাদু/বৃদ্ধ কৃষকের সঙ্গে সম্পর্ক বিবেচনায়)
বুজি/নাতনি মারা যায়- (পচানো) জ্বরে
ছোট ফুপু/মেয়ে মারা যায়- সাপের কামড়ে
দাদির/স্ত্রীর গ্রামের নাম- উজান-তলী/ উজান-তলীর গাঁ
জোড়মাণিক- বাবা-মা/ পুত্র-পুত্রবধূ
বুজি/নাতনির বিয়ে দিয়েছিল- কাজিদের বাড়ি (বনিয়াদি পরিবার)
ছোট ফুপু মারা যায়- ৭ বছর বয়সে

এইখানে তোর দাদীর কবর ডালিম-গাছের তলে, (১ম চরণ)
তিরিশ বছর ভিজায়ে রেখেছি দুই নয়নের জলে।
এতটুকু তারে ঘরে এনেছিনু সোনার মতন মুখ,
পুতুলের বিয়ে ভেঙে গেল বলে কেঁদে ভাসাইত বুক।
এখানে ওখানে ঘুরিয়া ফিরিতে ভেবে হইতাম সারা,
সারা বাড়ি ভরি এত সোনা মোর ছড়াইয়া দিল কারা।

এমনি করিয়া জানি না কখন জীবনের সাথে মিশে
ছোট-খাট তার হাসি ব্যথা মাঝে হারা হয়ে গেনু দিশে।

শাপলার হাটে তরমুজ বেচি ছ পয়সা করি দেড়ী,
পুঁতির মালার একছড়া নিতে কখনও হত না দেরি।
দেড় পয়সার তামাক এবং মাজন লইয়া গাঁটে,
সন্ধ্যাবেলায় ছুটে যাইতাম শ্বশুরবাড়ির বাটে।

নথ নেড়ে নেড়ে কহিত হাসিয়া, “এতদিন পরে এলে,

শত কাফনের, শত কবরের অঙ্ক হৃদয়ে আঁকি,
গণিয়া গণিয়া ভুল করে গণি সারা দিনরাত জাগি।

ঘরের মেঝেতে সপটি বিছায়ে কহিলাম বাছা শোও,
সেই শোওয়া তার শেষ শোওয়া হবে তাহা কী জানিত কেউ?

তোমার কথার উত্তর দিতে কথা থেমে গেল মুখে,
সারা দুনিয়ার যত ভাষা আছে কেঁদে ফিরে গেল দুখে।

গাছের পাতারা সেই বেদনায় বুনো পথে যেত ঝরে,
ফালগুনী হাওয়া কাঁদিয়া উঠিত শুনো-মাঠখানি ভরে।
পথ দিয়া যেতে গেঁয়ো পথিকেরা মুছিয়া যাইত চোখ,
চরণে তাদের কাঁদিয়া উঠিত গাছের পাতার শোক। (পিতা/পুত্র সম্পর্কে)

তাই জীবনের প্রথম বেলায় ডাকিয়া আনিল সাঁঝ,
হায় অভাগিনী আপনি পরিল মরণ-বিষের তাজ।

ব্যথাতুরা সেই হতভাগিনীরে বাসে নাই কেহ ভালো,
কবরে তাহার জড়ায়ে রয়েছে বুনো ঘাসগুলি কালো।
বনের ঘুঘুরা উহু উহু করি কেঁদে মরে রাতদিন,
পাতায় পাতায় কেঁপে উঠে যেন তারি বেদনার বীণ। (বুজি/নাতনি সম্পর্কে)

বুকেতে তাহার জড়ায়ে ধরিয়া কেঁদে হইতাম সারা,
রঙিন সাঁঝেরে ধুয়ে মুছে দিত মোদের চোখের ধারা।

একদিন গেনু গজনার হাটে তাহারে রাখিয়া ঘরে,
ফিরে এসে দেখি সোনার প্রতিমা লুটায় পথের ’পরে। (ছোট ফুপু/মেয়ের সম্পর্কে)

আস্তে আস্তে খুঁড়ে দেখ দেখি কঠিন মাটির তলে,
দীনদুনিয়ার ভেস্ত আমার ঘুমায় কিসের ছলে।

ওই দূর বনে সন্ধ্যা নামিছে ঘন আবিরের রাগে,
অমনি করিয়া লুটায়ে পড়িতে বড় সাধ আজ জাগে।
মজিদ হইতে আযান হাঁকিছে বড় সকরুণ সুর,
মোর জীবনের রোজকেয়ামত ভাবিতেছি কত দূর।
জোড়হাতে দাদু মোনাজাত কর, “আয় খোদা। রহমান।
ভেস্ত নসিব করিও সকল মৃত্যু-ব্যথিত-প্রাণ।” (শেষ চরণ)


শব্দার্থ ও টীকা
বাট- পথ, রাস্তা
ছপ/সপ- পাটি, চাটাই
আমালে- গোয়ালে, গোশালায়
শুনো- শূণ্য
গহীন- গভীর
সায়র- সাগর
তাজ- মুকুট, শিরোভূষণ
মাথাল- তালপাতা, গোলপাতা ও বাঁশের কাঠি দিয়ে তৈরি কৃষকদের ব্যবহৃত বড় টুপি
রহমান- দয়াময়
বুজি- বুবুজি, বড় বোন
বনিয়াদি- প্রাচীন ও সম্ভ্রান্ত
দেড়ি- দেড়গুণ
মজিদ- মসজিদ

লেখক পরিচিতি
জন্ম : ১৯০৩, ফরিদপুর জেলার তাম্বুলখানা গ্রামে
মৃত্যু : ১৯৭৬, ঢাকায়
কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র থাকা অবস্থায় তাঁর ‘কবর’ কবিতা প্রবেশিকা/ এস.এস.সি/ entrance (এনট্রান্স) পাঠ্যতালিকায় অন্তর্ভূক্ত হয়।
কিছুকাল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। পরে সরকারের প্রচার ও জনসংযোগ বিভাগে উচ্চপদে আসীন হন।
রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টর অব লিটারেচার উপাধি
গ্রন্থ-
কাব্যগ্রন্থ- নকশী কাঁথার মাঠ, সোজন বাদিয়ার ঘাট, বালুচর, ধানখেত, রঙিলা নায়ের মাঝি
এছাড়া্ও স্মৃতিকথা, ভ্রমণকাহিনী, নাটক ও প্রবন্ধ লিখেছেন

ভাষা অনুশীলন/ব্যাকরণ অংশ
লিঙ্ক- সমোচ্চারিত ভিন্নার্থক শব্দ, বানান, ব্যুৎপত্তি

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বিগত বছরের প্রশ্ন
  • ‘কবর’ কবিতায় ছোট ফুপু কত বছর বয়সে মারা যান? (ক-২০০৯-১০)
  • ‘বনের ঘুঘুরা উহু উহু করি কেঁদে মরে রাতদিন/ পাতায় পাতায় কেঁপে উঠে যেন তারি বেদনার বীণ’- যার কথা বলা হয়েছে সে বৃদ্ধের নাতির কী হয়? (ঘ-২০০৯-১০)
  • ‘‘রঙ্গিন সাঁঝেরে ধুয়ে মুছে দিত মোদের চোখের ধারা।’’ পংক্তিটির আগের পংক্তি   (ঘ-২০০৮-০৯)
  • ‘কবর’ কবিতাটি প্রবেশিকা বাংলা সংকলনে অন্তর্ভূক্ত হয়েছিল- (ঘ- ২০০৬-০৭)
  • কোন কবিতাটি কবির ছাত্রাবস্থায় মাধ্যমিক স্তরের পাঠ্য তালিকাভুক্ত হয়? (ঘ-২০০৪-০৫)
  • ‘ঘরের মেঝেতে সপটি বিছায়ে কহিলাম বাছা শোও’-এর পরের পংক্তি- (ঘ-২০০৩-০৪)
  • জসিমউদদীনের ‘কবর’ কবিতাটি কোন ছন্দে রচিত? (ঘ-২০০০-০১)
  • ফিরে এসে দেখি সোনার প্রতিমা লুটায় পথের পরে।- কবর কবিতায় এই সোনার প্রতিমা হল- (ক-২০০৬-০৭)
  • ‘এইখানে তোর দাদীর কবর ডালিম গাছের তলে’ পংক্তিটি কোন ছন্দে রচিত? (ক-২০০৫-০৬)
  • ‘কবর’ শব্দটি কোন ভাষা থেকে আগত? (গ-২০১০-১১)
  • ‘কবর’ কবিতাটি প্রথম কোন পত্রিকায় প্রকাশিত হয়? (গ-২০০৮-০৯)
  • ‘কবর’ কবিতাটির পরীর সঙ্গে যার তুলনা করা হয়েছে, সে হলো: (গ-২০০৫-০৬)
  • ‘ভেস্ত নসিব করিও সকল মৃত্যু-ব্যথিত প্রাণ।’- এ লাইনটির কবিতার নাম- (গ-২০০৩-০৪)
  • জসীমউদ্দীনের ‘কবর’ কোন ছন্দে রচিত? (গ-২০০২-০৩)
অনলাইন এ ক্লাস করুন একদম ফ্রী. …
(প্রতিদিন রাত ৯টা থেকে ১০.৩০টা পর্যন্ত)
Skype id - wschoolbd


Web School BD

বাংলাদেশের প্রথম অনলাইন ভিত্তিক ট্রেনিং সেন্টার "Web School BD". ওয়েব স্কুল বিডি : https://www.webschool.com.bd

Post a Comment

আপনার কোন কিছু জানার থাকলে কমেন্টস বক্স এ লিখতে পারেন। আমরা যথাযত চেস্টা করব আপনার সঠিক উত্তর দিতে। ভালো লাগলে ধন্যবাদ দিতে ভুলবেন না। শিক্ষার্থীরা নোট ,সাজেশান্স ও নতুন নতুন ভিডিও সবার আগে পেতে আমাদের Web School BD চ্যানেলটি সাবস্ক্রাইব SUBSCRIBE করতে পারো।
- শুভকামনায় ওয়েব স্কুল বিডি

Previous Post Next Post